মাইটিভির মালিকের ছেলে বললেই বেশি গর্ববোধ করি : তৌহিদ আফ্রিদি নিউজ ২০২০

 

YouTuber TAWHID AFRIDI
ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি

দেশের জনপ্রিয় ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি। ২০১৭ সালে গুগল ট্রেন্ডিংয়ে তার নাম দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন। সে বছর গুগল ট্রেন্ডিংয়ে বাংলাদেশের তালিকায় সবচেয়ে বেশি খোঁজ করাদের মধ্যে আফ্রিদি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। ‘তৌহিদ আফ্রিদি’ নামে তার ইউটিউব চ্যানেলে এখন সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা সাড়ে ৩৫ লাখেরও বেশি। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তার ভিডিও দেখছেন।


এই সাফল্য একদিনে হয়নি। এর পেছনে রয়েছে কষ্ট ও পরিশ্রমের গল্প। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেই গল্পই শোনালেন তৌহিদ আফ্রিদি। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-




সাখাওয়াত ৩৬০ : ইউটিউবে আপনার শুরুটা জানতে চাই।

তৌহিদ আফ্রিদি : এটা আসলে বেশ লম্বা গল্প হয়ে যাবে।


সাখাওয়াত ৩৬০ : শুনি, শুরু থেকে আপনার গল্পটা জানবো।

তৌহিদ আফ্রিদি : আমার পরিবার তো মিডিয়ারই। ২০০০ সালে বাংলাদেশে যখন দু-চারটি প্রোডাকশন হাউজ ছিল তখন আমার বাবার একটি ছিল নাম ‘ভিউ মিডিয়া’। আমার বেড়ে ওঠা বড় বড় সেলেব্রিটি দেখতে দেখতে। দেখতাম ডিবি ক্যামেরা দিয়ে শুট হচ্ছে, মেকআপ, অভিনয়, চিৎকার, হুল্লোড়। এসব দেখতে দেখতে আমি বড় হয়েছি। একটা পর্যায় মিডিয়ার প্রেমে পরে গেলাম। নেশা ঢুকে গেল নিজের প্রিয় আর স্বপ্নের মানুষদের মতো হতে হবে ভেবে।


মিডিয়ার পোকা ঢুকলো তো পড়াশোনা খারাপ হতে থাকলো। হঠাৎ বাবা জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে কেন? কি সমস্যা হচ্ছে বলো? তুমি কি হতে চাও?’ বলতে পারতাম না ভয়ে বাবা না আবার রাগ করে।


নিজের মতো করে সেই ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে টুকটাক ক্যামেরা দিয়ে কিছু করতাম। এডিটও করতাম। যখন মাইটিভি হলো তখন দেখলাম এমসিআরে কাজ করে কীভাবে এডিট করে ক্যামেরা লাইট এডজাস্ট হচ্ছে। বাবা যখন দেখলো মিডিয়ার প্রতি আমার একটু ভালোবাসা রয়েছে তখনই আমার বাবা আমাকে লন্ডনে পাঠিয়ে দিয়েছেন মিডিয়ার ওপর পড়াশোনা করার জন্য।


আমি ক্যানবুক ইউনিভার্সটি অ্যান্ড কলেজে এডমিশন নিই এবং এ-লেভেল শেষ করে বাংলাদেশে চলে আসি। বিদেশে পড়শোনা করেছি, তিন মাস পরপর ঢাকা আসতাম। ভিডিও বানিয়েছি, আবার গেছি। এই রকম চলতে থাকে।


আসলে একটা বিষয় আমি আজ উপলব্ধি করি যেটা ওই বয়সে বুঝতাম না। আমি মিডিয়ার প্রতি এতো ইন্টারেস্টেড ছিলাম না। আমার ইন্টারেস্ট ছিল মিডিয়ার মানুষের প্রতি। যেমন মেকআপম্যান, ক্যামেরাম্যান এদের প্রতি আমার ভালোবাসাটা বেশি জন্মেছিল। আমি দেখতাম পরিশ্রমটা বেশি এরাই করে। একজন সেলিব্রেটির পেছনে কারিগর তারাই। অবাক হয়ে ভাবতাম পর্দায় কি দেখি আর সেটা বাস্তবে এরকম। পর্দার সুন্দর মানুষটির জন্য, চমৎকার কাজটির জন্য এই লোকদের কত পরিশ্রম ও চেষ্টা। ভাবতাম মেকআপম্যান হবো, ক্যামেরাম্যান হবো। এইসব আরকি!


সাখাওয়াত ৩৬০ : কিন্তু হয়ে গেলেন ইউটিউবার.....

তৌহিদ আফ্রিদি : হা হা হা। হ্যাঁ। সেটাই। দেখুন বাংলাদেশে জোম্বি নিয়ে আমি প্রথম নাটক বানাই যখন আমি খুব ছোট ছিলাম। সেটা ২০১০-২০১১ দিকে হবে। এভাবে কাজ করতে করতে শোবিজের প্রতি আরও ভালোবাসা তৈরি হয়। আমি চেষ্টা করতাম ব্রডকাস্ট থেকে লাইভ করার। সেটা করতে গিয়ে ২০১৪ সালের দিকে ইউটিউবের সঙ্গে পরিচয় হয় আমার। তখন থেকেই কাজ শুরু করি। আমার একটি শো ছিল ‘নন স্টপ প্রাঙ্ক’। এটি বাংলাদেশে প্রথম প্রাঙ্ক শো।


সেটি বেশ সাড়া পায়। এরপর অনেক রকম প্রোগ্রাম করতে করতে আজ এই পর্যন্ত আসা। ব্লগিং মার্কেটটাকে দেখলাম, সব সেক্টর ঘুরলাম। কষ্ট করেছি অনেক। লোকে অনেক ট্রল করেছে আমাকে নিয়ে। হতাশ হতাম। খারাপ লাগতো। আবার প্রচুর ভালোবাসাও পেয়েছি। সেই ভালোবাসার উৎসাহে কাজ করে গেছি নতুন করে। এখনো আছি এখানে।


সাখাওয়াত ৩৬০ : এতো পেশা বা কাজ থাকতে ইউটিউবার হলেন কেন?

তৌহিদ আফ্রিদি : একটা প্রভাব তো ছিলই শোবিজের। সেই ছোটবেলা থেকে। তারপর বলবো যে স্বাধীনতার জন্য। নিজের মেধাকে সঠিকভাবে বিকশিত করার জন্য। টেলিভিশন বা অন্য মাধ্যমে কোনো কাজ করতে গেলে অনেক নিয়মনীতি থাকে। সেসব জায়গায় চাইলে যেকোনো বিষয় নিয়ে কথা বলা যায় না। কিন্তু ইউটিউব এমন একটি জায়গা যেখানে নিজের মতো করে কাজ করা যায়। এই স্বাধীনতা আমি ইতিবাচকভাবে ব্যবহারের চিন্তা করেছি।


যেমন ধরুন নিজের দেশকে উপস্থাপন করার জন্য দেশের খুব সুন্দর একটি জায়গা নিয়ে কিছু করতে চাইছি। টেলিভিশনে করতে গেলে দেখবেন কত রকমের বাহানা-প্রতিব্ন্ধকতা চলে আসবে। এখানে কাজের বাজেটও একটা ফ্যাক্ট। স্পন্সর যোগার করো, কতকিছু। কিন্তু ইউটিউবে প্রচারের জন্য এসব প্রয়োজন নেই। বরং উল্টো তারা আমাকে টাকা দেবে যদি কনটেন্টটা ভালো হয়।


আমি কিন্তু এই পেশায় এসে শতভাগ সন্তুষ্ট। আগে পাপা (বাবা) বা আম্মুর কাছে টাকা চাইতে হতো। এখন হয় না। উল্টো এখান থেকে টাকা আয় করে আম্মু বা পাপাকে কিছু উপহার দিতে পারি। খুব ভালো লাগে তাদের আনন্দ দেখে। সব বাবা-মা এটা খুব গর্বের সঙ্গে নেয় যে সন্তান তাদের কিছু উপহার দিয়েছে।


আরেকটি বিষয় হলো, বৈচিত্র্যময় মানুষের মতামত, ভাবনা ও দর্শন জানতে পারা যায় একজন ইউটিউবার হিসেবে। পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে এখানে খুব সহজেই। মানুষ আপনার ব্যাপারে কেমন চিন্তা করে, মানুষ কী চায়, দুনিয়া কীভাবে চলছে সবকিছুর খবর আপনি এখান থেকে জানতে পারবেন।


সাখাওয়াত ৩৬০ : ইউটিউবার হিসেবে আপনার টার্নিং পয়েন্ট ভিডিও কোনটি ছিল ?

তৌহিদ আফ্রিদি : আসলে আমার জীবনে অধিকাংশ ভিডিওগুলোই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। ২০১৬ সালে আমার টার্নিং পয়েন্ট ছিল যখন আমি নতুন করে ‘ভ্লগ’ করে বাংলাদেশে পরিচিত করে দেই বিষয়টি। মানুষ জানতো ‘ব্লগ’। কিন্তু আমি করছি ‘ভ্লগ’। লাইফের উপর কেন্দ্র করেই ‘ভ্লগ ’। এটাকে যখন পরিচয় করে দিতে শুরু করলাম সবার কাছে তখন থেকেই আমার পরিচিতি অনেকগুণ বেড়ে যায় এবং সবাই মনে করে ‘তৌহিদ আফ্রিদি’ মানে ভ্লগ। আমার হিট খেয়েছে যেসব ভিডিও সেসব হচ্ছে ভ্লগ। অনেকে এটাকে ‘ভি লগ’ বলেন।


সাখাওয়াত ৩৬০ : এতদূর চলার পথে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কাদের ?

তৌহিদ আফ্রিদি : সবার আগে পাপা। মা-ও আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। সাহস দিয়েছেন। তাদের দোয়াতেই এতদূর আসতে পেরেছি। তারা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছে যে আমি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো এবং তাদের সম্মান রাখতে পারবো। আমি সেটা করতে পারছি বলেই মনে হয়। সেইসঙ্গে বলবো যারা আমার ভিডিওগুলোকে ভালোবেসেছেন, ছড়িয়ে দিয়েছেন একে অন্যের কাছে তারা আমার অনেক বড় প্রেরণা। একটি কাজ প্রশংসিত হয়েছে বলেই আরেকটি কাজ করার সাহস পেয়েছি। তাই বলবো বাবা-মা আর ভক্তরা; এই তিনকূল মিলিয়ে আমার ইউটিউবের দুনিয়ায় পথচলা।


সাখাওয়াত ৩৬০ : আপনার বাবাকে সবাই চেনে! আপনাকেও সবাই চেনে। আবার অনেকে এটাও জানে আপনি মাইটিভি চ্যানেলের মালিকের ছেলে। পরিচয়ের জায়গায় কোনটি আপনি বেশি উপভোগ করেন? মাইটিভির মালিকের ছেলে নাকি ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি.....

তৌহিদ আফ্রিদি : পরিবার বা আমার ব্যক্তি জীবনে নিজেকে আমি বাবার পরিচয়েই পরিচিতি করতে ভালোবাসি। আমার বাবা অনেক কষ্ট করেছেন তার জীবনে প্রতিষ্ঠার জন্য। আমার এই সামান্য পরিচয় কোনো বিষয়ই না তার সামনে। আমার বাবা কষ্ট করে একজন সফল মানুষ হয়েছেন। সেই মানুষের ছেলে আমি এই পরিচয় দিতে খুব গর্ব হয়।


আমি আরও অনেক বড় কিছু হলেও বাবার পরিচয় দিতে চাই। আমাকে যদি পৃথিবীর সেরা জায়গায় ডেকে নিয়ে বলে তুমি কে? আমি বলবো আমি নাসিরউদ্দিন সাথির ছেলে। বাবার জন্যই আমার তো এতদূর আসা। মাইটিভির মালিকের ছেলে বললেই বেশি গর্ববোধ করি আমি। কারণ মাইটিভির মালিক হওয়ার পেছনে আমার বাবার দীর্ঘ স্ট্রাগলকে আমি রেসপেক্ট করি। এটা আমার পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে বললাম।


সাখাওয়াত ৩৬০ : অনেকেই ইউটিউবার থেকে আজ অভিনেতা হয়েছেন! আপনাকে তেমনটা দেখা যায় না কেন?

তৌহিদ আফ্রিদি : সবাই সবকিছু পারে না আবার করেও না। অনেক নাটক, টিভিসি ও সিনেমারও প্রস্তাব পেয়েছি আমি। অনেক বড় বড় মানুষ আমাকে অফার দিয়েছেন কাজের জন্য। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে আদর করেন। পছন্দ করেন। আমি বিনয়ের সঙ্গে তাদের না করেছি।


আমার একটি অডিয়েন্স আছে। যারা আমাকে আজকের পরিচিতি ও অবস্থান দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে কিংবা আমি যেখানে যাবো তারাও সেদিকে যাবেন সেটা ভেবে হঠাৎ করেই তো কিছু করলে হবে না। আমি যদি দেখি কাল শাকিব খান নাটক করছে আমি তাহলে তাকে আর নিতে পারবো না। যদি দেখি আমির খান বিয়েতে নাচতে গেছে এটা কিন্তু আমি নিতে পারবো না। কারণ আমি আজীবন দেখে আসছি তাদের আলাদা বিষয়গুলো। আমি কিন্তু নিজেকে তুলনা করছি না তাদের সঙ্গে। জাস্ট আমেজ বলেন বা ফিল বলেন সেটার বোঝানোর চেষ্টা করলাম।


আমার মনে হয় নিজের জন্য বেটার অপশন তৈরি করতে পেরেছি আমি। ইউটিউব আমাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে যা অনেক প্রাপ্তির বলে মনে করি। পৃথিবীতে পাঁচটি বিখ্যাত কোম্পানির মধ্যে একটি ফেসবুক। আমার সঙ্গে কাজের জন্য চুক্তি করেছে তারা। মুম্বাইয়ের ফেসবুক থেকে আমাকে ইনভাইট করেছে, এক বছরের চুক্তি করছে তারা। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমাকে প্রমোট করতে নিয়ে গেছে ইউটিউবের থ্রোতে। আমি ওদের দেশের বালির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এরচেয়ে বড় সম্মান আর কি হতে পারে! আমি আমি যদি নাটক-সিনেমার জায়গা থেকে শুরু করতাম তাহলে ইউটিউবে আসতাম না।


সাখাওয়াত ৩৬০ : এখন দেখা যায় প্রায় সবাই ইউটিউব চ্যানেল খুলছেন। অনেকে মজা করে বলে থাকেন যে নামে নামে চ্যানেল। এর ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটি দিকই রয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই....

তৌহিদ আফ্রিদি : আমরা নেতিবাচক দিকটা খুব পছন্দ করি। ইউটিউবে আমরা ইতিবাচক কথা বলছি কিন্তু দেখা যায় টাইটেল নেগিটিভ। কিন্তু কেন? এর কারণ এভাবে ভিডিও পোস্ট করলে মানুষ আগ্রহী হয়। ধরুণ, একটা ঝগড়া হচ্ছে, সেখানে এক শ্রেণির মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে, আরেকজন হুজুগে বলবে- মার মার! আরেক শ্রেণির মানুষ উপেক্ষা করে চলে যাবে। আরেক শ্রেণির মানুষ প্রতিবাদ করবে। আমি চার নম্বর শ্রেণির মানুষটা সবসময় খুঁজি। চার নম্বর বাদে বাকি তিন শ্রেণির মানুষ সবসময় ইউটিউবে ঘুরতে থাকে।


ইউটিউব দিয়ে যেমন ক্যারিয়ার দাঁড়ায়, তেমনি এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার ধ্বংসও হয়। এটা ঘটে শুধু একটা দুইটা ভুলের কারণে। দুদিনের খ্যাতির জন্য তো পৃথিবী না। বরং এমন কিছু করা প্রয়োজন যা পৃথিবী আজীবন মনে রাখবে। যার যেমন ইচ্ছে ও স্বপ্ন সে যদি সেই মতে কাজ করতে পারে সমালোচনার কিছু নেই। আর যদি সে সেটা না পারে তাহলে নিজেই তো সরে যাবে। তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কিছু নেই।


সাখাওয়াত ৩৬০ : মিডিয়া বা ইউটিউব নিয়ে আপনার সামনের পরিকল্পনা কি ?

তৌহিদ আফ্রিদি : ইউটিউবের সাবস্ক্রাইব ৫ মিলিয়ন করার পর আমি একটু স্টপ দিতে চাই। কারণ আমার বাবার বিজনেস আছে। বাবার পাশে একটু দাঁড়াতে চাই। আসলে একটি সন্তানের তখনই গর্ববোধ হয় যখন সে তার বাবার পাশে দাঁড়াত পারে।


আমাদের একটি কেমিকেল বিজনেস আছে। বাবা চান আমি বিষয়টি দেখি। আমিও প্রস্তুতি নিচ্ছি মানসিকভাবে। এখন একটু বয়সও বাড়ছে (হাহাহাহা)। আর কতদিন আর ছোট থাকবো বলেন? লাফালাফি, চঞ্চলতা একটু কমে যাচ্ছে টের পাচ্ছি নিজের মধ্যে।


সাখাওয়াত ৩৬০ : বিশ্বের অনেক বড় বড় ইউটিউবারকে দেখা যায় তাদের আয় দিয়ে নানারকম চ্যারিটিতে দান করেন। নানা রকম সামাজিক কার্যক্রম করে থাকেন। আপনিও নানা রকম অনুদান করে থাকেন বলে শুনেছি। একটু বিস্তারিত বলবেন-

তৌহিদ আফ্রিদি : শুধু ইউটিউব নয়, আমার কাজের যেসব সেক্টর থেকে টাকা আসে সেটি আমার চ্যারিটি ফান্ডে যায়। আমি সাধারণত প্রতিবন্ধি, পথশিশু ও স্কুলে অনুদান দেয়ার চেষ্টা করি। এখন স্কুলে বেশি করছি। প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি। আমার আয় বা পাপা যা দেন সেখান থেকে ৪৫ শতাংশ টাকা চ্যারিটিতে দিই। এই টাকা পাওয়ার পরই ৪৫ শতাংশ আলাদা করে ফেলি চ্যারিটির জন্য। এটা আমি আজীবন করে যেতে চাই।


সাখাওয়াত ৩৬০ : আপনি অনেক সেলেব্রিটির সাথে ভ্লগ করেছেন। কার সঙ্গে ইচ্ছে আছে ভ্লগ করার এখনো করা হয়ে উঠেনি?

তৌহিদ আফ্রিদি : তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ, মোশাররফ করিম ভাইদের সঙ্গে ভ্লগ করতে চাই সুযোগ হলে। এছাড়া যারা লিভিং লিজেন্ড আছেন আমাদের, তাদের সঙ্গেও ভ্লগ করার ইচ্ছে আছে।


সাখাওয়াত ৩৬০ : ইউটিউব থেকে আপনার প্রথম আয় কত ছিল?

তৌহিদ আফ্রিদি : প্রথম দুই বছর তো আমি কোনো আয় করিনি। যখন আমি আয় করা শুরু করছি তখন আমার 

প্রতি মাসে আসতো ১৫০০ ডলার।


সাখাওয়াত ৩৬০ : বাংলাদেশে কোন ইউটিউবারকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন?

তৌহিদ আফ্রিদি : প্রত্যেকটা ইউটিউবারকে এখন আমি প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। কারণ এখন বোঝা যায় না কে কখন টপকে যাবে। আর প্রতিদ্বন্দ্বীরা আমার উৎসাহ। মানে যারা ভালো কিছু করছেন সবাই। আমি তাদের কাজগুলোও দেখি। শেখার কিছু থাকলে সেটা গ্রহণ করি।


সাখাওয়াত ৩৬০ : শেষ প্রশ্ন। দীর্ঘ আলাপচারিতায় একজন সদালাপী, জীবন, পরিবার ও দায়বোধ সম্পর্কে বেশ সচেতন একজন তৌহিদ আফ্রিদিকেই পেলাম। কিন্তু প্রচলিত আছে আপনি অনেক ভাব নেন এবং ওভার অ্যাক্টিং করেন। কতটুকু সত্যি?

তৌহিদ আফ্রিদি : হা হা হা... একদমই মিথ্যা কথা। নিখুঁত মিথ্যা কথা এইটা। আমি তো ভাব নেই না। যদি কেউ বলতে পারে আমার সামনে এসে আমি ইউটিউব ছেড়ে দেব। ওভার অ্যাক্টিংয়ের ব্যাপারে বলবো যে হ্যাঁ, কখনো কখনো করি। কারণ আমার এই ওভার অ্যাক্টিংয়ের জন্যই আমি আজকের তৌহিদ আফ্রিদি।

No comments

Powered by Blogger.